আজকের আলোচনার বিষয়ঃ আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড । যা উচ্চতর গণিতের অন্তর্গত।
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড
পৃথিবীর সকল দেশের ক্রীড়াবিদদের নিয়ে যেমন ক্রীড়ার শ্রেষ্ঠ আসর অলিম্পিক খেলা হয় ঠিক একইভাবে সারা পৃথিবীর মেধাবী তরুণদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন শাস্ত্র, ইনফরমেটিক্স (কম্পিউটার প্রোগ্রামিং), জীববিজ্ঞান, দর্শন, ভূগোল ও মহাকাশ বিদ্যা এর মধ্যে অন্যতম।
এই প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণের মাধ্যমে সকল দেশের ছেলেমেয়েদের মধ্যে যেমন বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপিত হয়, ঠিক তেমনি এই প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণের ফলে বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিশ্বমানের দক্ষতাও তৈরি হয়। এই অলিম্পিয়াডগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম শুরু হয় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড (আইএমও)। এর প্রথম আসর বসে ১৯৫৯ সালে রুমানিয়ায়। ঠিক অলিম্পিক আসরের মত এই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
আইএমওতে একটি দেশ থেকে সর্বোচ্চ ৬ জন স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ছাত্র/ছাত্রী অংশগ্রহণ করতে পারে। তাদের সঙ্গে একজন দলনেতা এবং উপদলনেতা থাকতে পারে। মেধার এই শ্রেষ্ঠ আসরে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম ২০০৫ সালে অংশগ্রহণ করে। এবাৰত এই প্রতিযোগিতা থেকে বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা ৬টি রৌপ্য, ১৯টি ব্রোঞ্জ এবং ২৫টি সম্মানসূচক উদ্ধৃতি অর্জন করে প্রমাণ করেছে যে যত কঠিনই হোক না কেন আমাদের তরুণেরা দক্ষতার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে। পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইএমওতে সাফল্য অর্জনকারী ছাত্রদের পড়ালেখার জন্য আকৃষ্ট করে।
এই প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণ করে পরবর্তী জীবনে অনেকেই নামকরা বৈজ্ঞানিক হয়েছে। অনেকেই গণিতের নোবেল পুরস্কার খ্যাত ফিল্ডস মেডালসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি পেরেছে। এর মধ্যে টেরেন্স টাও (সর্ব কনিষ্ঠ আইএমও ব্রোঞ্জ, রৌপ্য, স্বর্ণ পদক ও ফিল্ডস মেডাল বিজয়ী এবং অতিপ্রজ গবেষক), গ্রিগরি পেরেলম্যান (১৯৮২ সালে আইএমওতে পূর্ণ নম্বর পেয়ে স্বর্ণ পদক পান, পয়েনকারে কনজেকচার প্রমাণ করার সুবাদে এক মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার এবং ২০০৬ সালে ফিল্ডস মেডাল নিতে অস্বীকার করেন), ফিল্ডস মেডাল বিজয়ী প্রথম মহিলা স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইরানের মরিয়ম মির্যাখানি (১৯৯৫ সালে আইএমওতে পূর্ণ নম্বর পেয়ে স্বর্ণ পদক পান এবং ২০১৭ সালে মাত্র ৪০ বছর বয়সে এই ক্ষণজন্মা পণিতজ্ঞ মৃত্যুবরণ করেন) উল্লেখযোগ্য।

আরও দেখুনঃ