Site icon Mathematics Gurukul [ ম্যাথমেটিক্স গুরুকুল ] GOLN

দশমিক ভগ্নাংশের গসাগু

দশমিক ভগ্নাংশের গসাগু

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ দশমিক ভগ্নাংশের গসাগু । এটি সপ্তম শ্রেনী গণিতের ভগ্নাংশের গসাগু ও লসাগু এর অন্তর্গত।

 

 

দশমিক ভগ্নাংশের গসাগু

এক্ষেত্রে আমরা দুটি পদ্ধতিতে দশমিক ভগ্নাংশের গসাগু ও লসাগু শেখার চেষ্টা করব।

প্রথমেই দুটি দশমিক ভগ্নাংশ নিব। ১.২ ও ০.১৮। আমরা এই দুটি দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যার গসাগু নির্ণয় করার চেষ্টা করব।

এখন গসাগু নির্ণয় করতে গেলে আমরা সরাসরি গুণনীয়ক কিংবা গুণিতক নিয়ে কাজ করব না। আমরা আগে চিন্তা করে দেখব কীভাবে দশমিক ভগ্নাংশ দুটিকে পূর্ণসংখ্যায় রুপান্তর করা যায়।

দেখো, ১.২ এ, দশমিকের পর একটি অঙ্ক রয়েছে। তাহলে ১০ দিয়ে যদি এই দশমিক ভগ্নাংশটিকে গুণ করা হয়, তাহলেই কিন্তু একটি পূর্ণসংখ্যা পাওয়া যেতে পারে। কেন এই ব্যাপারটি ঘটবে তা কিন্তু তুমি দশমিক ভগ্নাংশ থেকে সাধারণ ভগ্নাংশে রুপান্তরের ধারণা থেকে দেখে এসেছো। অর্থাৎ,

১.২ = ১২/১০ তাহলে, ১.২ × ১২/১০ = ১২/১০ × ১০ = ১২

 

 

এখন দেখো, ০.১৮ এর ক্ষেত্রে আমরা কি করব? এখানে দশমিকের পরে কিন্তু দুটি অঙ্ক রয়েছে। তাই, এই দশমিক ভগ্নাংশটিকে আমরা কিন্তু এবার ১০ দিয়ে গুণ না করে ১০০ দিয়ে গুণ করব। এক্ষেত্রেও পূর্বের ন্যায় পাওয়া যায়, ০.১৮ = ১৮/১০০ = ১৮/১০০ × ১০০ = ১৮

এখন গসাগু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, সেটি হল, শুধু পূর্ণসংখ্যায় রুপান্তর করলেই হবে না। প্রত্যেকটি দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যাকেই একই সংখ্যা দিয়ে গুণ করে দশমিক ভগ্নাংশ থেকে পূর্ণ সংখ্যায় রুপান্তর করতে হবে। উপরের উদাহরণে দেখা যাচ্ছে, ১.২ এর সাথে ১০ গুণ করা হয়েছে, কিন্তু ০.১৮ এর সাথে ১০০ গুণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১০ ও ১০০ সমান নয়।

তাহলে ভেবে দেখো তো, ০.১৮ কে ১০ দিয়ে গুণ করলে সেটি কি পূর্ণসংখ্যা থাকত?

১.৮ × ১০ = ১৮/১০০ × ১০ = ১৮/১০০ = ১.৮। দেখা যাচ্ছে ১.৮ কিন্তু পূর্ণসংখ্যা নয়।

এবার দেখো তো ১.২ কে ১০০ দিয়ে গুণ করলে সেটি পূর্ণসংখ্যা হয় কিনা?

১.২ × ১০০ = ১২/১০ × ১০০ = ১২০। ১২০ কিন্তু একটি পূর্ণসংখ্যা।

তাই গসাগু নির্ণয় করার উপযুক্ত আকারে যাওয়ার জন্য উভয় দশমিক ভগ্নাংশকেই ১০০ দিয়ে গুণ করে পূর্ণসংখ্যায় রুপান্তর করতে হবে।

এখন চিন্তা করো, ১০০ দিয়ে গুণ করা হলে আমরা কিন্তু দুটি পূর্ণসংখ্যা ১৮ ও ১২০ পাচ্ছি। তোমরা কিন্তু পূর্ণসংখ্যার গসাগু নির্ণয় করার পদ্ধতি জানো। সংখ্যা দুটির গসাগু হবে, ৬।

 

 

দেখো, আমরা কিন্তু ১.২ ও ০.১৮ এর গসাগু নির্ণয় করতে চেয়েছিলাম। ১২০ ও ১৮ এর নয় কিন্তু।

আমরা ১.২ ও ০.১৮ এর সাথে ১০০ গুণ করে ১২০ ও ১৮ পাই এবং সেটির গসাগু নির্ণয় করলাম। অর্থাৎ, ১০০ সংখ্যাটি কিন্তু বেশি গুণাকারে রয়েছে। তাই এবার এটির কিন্তু সমতা করা প্রয়োজন। তাহলে সমতা করার জন্য নির্ণীত গসাগু হতে ১০০ ভাগ করতে হবে।

অতএব গসাগু হবে, ৬/১০০ = ০.০৬, এটি ছিল আমাদের প্রথম পদ্ধতি।

এবার আরেকটি পদ্ধতি রয়েছে কিন্তু। সেটি হলো, দশমিক ভগ্নাংশকে, সাধারণ ভগ্নাংশে রূপান্তর করে, সাধারণ ভগ্নাংশের সাহায্যে গসাগু নির্ণয়।

সাধারণ ভগ্নাংশে রূপান্তরের পদ্ধতিতে যাওয়ার আগে চিন্তা করে দেখো তো, প্রথম পদ্ধতিতে দেখে আসা সমতা করার পদ্ধতিটি কি একটু চেনা লাগছে? চিন্তা করো, পূর্বে যখন আমরা সাধারণ ভগ্নাংশের গসাগু নির্ণয় করতে চেয়েছিলাম, তখন কিন্তু ভগ্নাংশ দুটিকে সমহরে রুপান্তর করেছিলাম। পরে গসাগু নির্ণয়ের সময় আলাদা করে লবের গসাগু নির্ণয় করে পরবর্তীতে সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশের হর দিয়ে ভাগ করেছিলাম। চলো, এই উদাহরণটির সাহায্যেই দেখি। ১.২ কে সাধারণ ভগ্নাংশে রুপান্তর করা হলে কত হবে?

১.২ = ১২/১০ (এখানে আমাদের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু দশমিক ভগ্নাংশ আকারে গসাগু নির্ণয় করা। তাই গণনার স্বার্থে আমরা হরে ১০ কিংবা ১০০ প্রভৃতি জাতীয় রাশি রাখার চেষ্টা করব)

আবার ০.১৮ কে সাধারণ ভগ্নাংশে রূপান্তর করলে কি পাব? ০.১৮ = ১৮/১০০।

 

গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

এখন ভাবো, আমরা ১২/১০ এবং ১৮/১০০ এর গসাগু কীভাবে নির্ণয় করতে পারি? খুব সহজেই সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশে রুপান্তর করে গসাগুটি নির্ণয় করতে পারি। ১০ ও ১০০ এর লসাগু কত হয়? ১০০। তাহলে সমহর বিশিষ্ট ১২০ ১৮ ভগ্নাংশে রূপান্তর করতে ভগ্নাংশ দুটি কত হবে? ১২/১০ =১২০/১০০। অপরদিকে ১৮/১০০ আগের আকারেই থাকে।

পরবর্তীতে কিন্তু আমরা সাধারণ ভগ্নাংশের গসাগু যে পদ্ধতিতে নির্ণয় শিখেছি, সেই পদ্ধতিতেই গসাগু নির্ণয় করব। অর্থাৎ, গসাগুটি হবে একটি ভগ্নাংশ, যার হর হবে সমহরবিশিষ্ট ভগ্নাংশ দুটির হর এবং লব হবে, সমহরবিশিষ্ট ভগ্নাংশ দুটির গসাগু।

চিন্তা করো, আমরা প্রথম পদ্ধতিতে কি করেছি? আলাদাভাবে উভয়রাশিকে ১০০ দিয়ে গুণ করে ১২০ ও ১৮ পেয়েছিলাম এবং পরবর্তীতে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যাদুটির গসাগু নির্ণয় করেছিলাম। সর্বশেষে সমতা করার জন্য গসাগুটিকে আবার ১০০ দিয়ে ভাগ করেছিলাম।

এখন কি তোমরা বুঝতে পারছো, এই দুটি পদ্ধতি আসলে একটি পদ্ধতিকেই নির্দেশ করে? অর্থাৎ, আমরা যে মূলত পূর্ণসংখ্যায় রূপান্তরের জন্য যে গুণ প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করছি, সেটি আসলে সাধারণ ভগ্নাংশ এবং এর সমহরে রুপান্তরের ধারণা থেকেই আসে।

উপরে যে প্রক্রিয়ায় গসাগু নির্ণয় করা হলো, সেই প্রক্রিয়াতে চাইলে কিন্তু একসাথে দুইয়ের অধিক দশমিক ভগ্নাংশের গসাগু নির্ণয় করা সম্ভব।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version