আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় পূর্ণসংখ্যার ক্রম – যা পূর্ণসংখ্যার জগৎ এর অন্তর্ভুক্ত। গণিত হল জ্ঞানের একটি ক্ষেত্র যাতে সংখ্যা, সূত্র এবং সম্পর্কিত কাঠামো, আকার এবং সেগুলির মধ্যে থাকা স্থানগুলি এবং পরিমাণ এবং তাদের পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই বিষয়গুলি যথাক্রমে সংখ্যা তত্ত্বের প্রধান উপশাখা,বীজগণিত, জ্যামিতি, এবং বিশ্লেষণ। তবে একাডেমিক শৃঙ্খলার জন্য একটি সাধারণ সংজ্ঞা সম্পর্কে গণিতবিদদের মধ্যে কোন সাধারণ ঐকমত্য নেই।
গণিতে সংখ্যা ও অন্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশিসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। গণিতবিদগন বিশৃঙ্খল ও অসমাধানযুক্ত সমস্যাকে শৃঙ্খলভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া খুঁজে বেড়ান ও তা সমাধানে নতুন ধারণা প্রদান করে থাকেন।গাণিতিক প্রমাণের মাধ্যমে এই ধারণাগুলির সত্যতা যাচাই করা হয়। গাণিতিক সমস্যা সমাধান সম্পর্কিত গবেষণায় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বা শত শত বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। গণিতের সার্বজনীন ভাষা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা একে অপরের সাথে ধারণার আদান-প্রদান করেন। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা।
পূর্ণসংখ্যার ক্রম
রমা ও রানী যে গ্রামে বাস করে সেখানে সিঁড়ি বাঁধানো একটি পুকুর আছে। পুকুরের পাড় হতে নিচ তলা পর্যন্ত 10 টি ধাপ আছে। একদিন তারা পুকুরপাড়ে গিয়ে দেখে যে পাড় হতে 5 ধাপ নিচে পানি আছে। বর্ষাকালে পানি কোথায় উঠে তা দেখার জন্য তারা পানির বর্তমান স্তরকে ০ দ্বারা চিহ্নিত করল। তারপর উপরের দিকে ধাপগুলোকে 1, 2, 3, 4, 5 দ্বারা চিহ্নিত করল। বর্ষাকালে বৃষ্টির পর তারা দেখল যে পানির স্তর 3 ধাপ পর্যন্ত উপরে উঠছে। বর্ষা চলে যাওয়ার কয়েক মাস পর দেখা গেল যে পানির স্তর 0 চিহ্নের 3 ধাপ নিচে নেমেছে।
শেষমেষ ওরা ভাবল যেহেতু বর্তমান অবস্থা থেকে পানি কমে গেলেই পানির স্তর নিচের দিকে নেমে যায়। আর সাথে সাথে ওদের মাথায় এল যে এর চেয়ে কম বা ছোট সংখ্যাগুলোতে ঋণাত্মক সংখ্যা বলে। তাই যেহেতু বর্তমান স্তরকে তারা 0 দিয়ে চিহ্নিত করেছে। তাই 0 এর নিচের দিকে (-) বিয়োগ চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বসালেই বুঝতে সুবিধা হবে। সে অনুযায়ী ০ এর নিচের ধাপগুলোকে তারা পরপর-1, 2, 3 দ্বারা চিহ্নিত করল। এর কিছুদিন পর পানি আরও এক ধাপ নিচে নেমে গেল। তখন তারা ঐ ধাপকে-4 দ্বারা চিহ্নিত করল।
এবার আরেকবার সংখ্যারেখায় পূর্ণসংখ্যাগুলো স্থাপন করি:
আমরা জানি, 7 > 4 এবং সংখ্যারেখায় আমরা দেখি যে, 4 এর ডানে 7
অনুরূপভাবে, 4> 0 অর্থাৎ ০ এর ডানে 4। আবার যেহেতু 3 এর ডানে ০, সুতরাং 0-3 অনুরূপভাবে, – ৪ এর ডানে- 3 হওয়ায়-3>-8।
এভাবে আমরা দেখতে পাই, সংখ্যারেখায় আমরা ডান দিকে গেলে সংখ্যার মান বৃদ্ধি পায় এবং বাম দিকে গেলে হ্রাস পায়।
অতএব… -3<2,2-1, -10, 01, 12, 23…
অর্থাৎ আমরা পূর্ণসংখ্যাগুলোকে পর্যায়ক্রমে… -4, -3, -2, -1, 0, 1, 2, 3, … আকারে লিখতে পারি।
১) নিচের ছবিটা দেখো।
এবার ছবি থেকে পাওয়া ধারণা নিয়ে অথবা > চিহ্ন দিয়ে নিচের খালি ঘরগুলো পূরণ করো:’
২) -5,7,8,-3,-1, 2, 1, 0, 9, 3 সংখ্যাগুলোকে সংখ্যারেখার সাহায্যে ছোট থেকে বড় অর্থাৎ ঊর্ধ্বক্রমে সাজাও।
৩) কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন দেশের চারটি স্থানের তাপমাত্রা তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো
স্থানের নাম | তাপমাত্রা | ফাঁকা কলাম |
ঢাকা | 0°C এর উপরে 30°C | |
কাঠমুন্ডু | 0°C এর নিচে 2°C | |
শ্রীনগর | 0°C এর নিচে 6°C | |
রিয়াদ | 0°C এর উপরে 40°C |
(ক) বিভিন্ন স্থানের তাপমাত্রা উপযুক্ত চিহ্নসহকারে পূর্ণসংখ্যায় উপরের ফাঁকা কলামে লেখো।
(খ) নিচের সংখ্যারেখায় উল্লিখিত সংখ্যাগুলো দ্বারা তাপমাত্রা বোঝানো হয়েছে।
৪) নিয়ে প্রদত্ত সংখ্যাদ্বয়ের মধ্যে কোনটি অন্যটির ডানে অবস্থিত তা সংখ্যারেখায় দেখাও:
৫) নিয়ে প্রদত্ত সংখ্যাদ্বয়ের মধ্যবর্তী পূর্ণসংখ্যাগুলো মানের ঊর্ধ্বক্রমে লেখো:
(ক) 0 এবং -7
(খ) – 4 এবং 4
(গ) 0 এবং 7
(ঘ) 30 এবং-23
৬)
(ক) -20 হতে বড় চারটি ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা লেখো।
(খ) -10 ছোট চারটি ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা লেখো।
গ) -10 এবং -5 এর মধ্যবর্তী চারটি ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা লেখো।
৭) নিচের বাক্যগুলোর পাশে সত্য হলে (√) এবং মিথ্যা (x) চিহ্ন দাও। প্রদত্ত বাক্যটি মিথ্যা হলে বাক্যটি শুদ্ধ করে লেখো।
প্রদত্ত বাক্য | বাক্যটি কি সত্য? |
শুদ্ধ বাক্য (প্রদত্ত বাক্যটি মিথ্যা হলে)
|
সংখ্যারেখায় -10 এর ডানে – 4 | ✔ | |
সংখ্যারেখায় -10 এর ডানে – 70 | ✗ | |
সবচেয়ে ছোট ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা -1
|
||
– 20 এর চেয়ে-26 বড়
|
||
– 25 সংখ্যাটি – 5 এবং 15 সংখ্যাদুটির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত
|
||
০ একটি ধণাত্মক সংখ্যা
|
||
0 একটি ঋণাত্মক সংখ্যা
|
||
একটি ঋণাত্মক সংখ্যা যেকোন অঋনাত্মক সংখ্যার চেয়ে বড়
|
আরও দেখুনঃ