আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় লসাগুর খেলা – যা মৌলিক উৎপাদকের গাছ এর অন্তর্ভুক্ত। গণিত হল জ্ঞানের একটি ক্ষেত্র যাতে সংখ্যা, সূত্র এবং সম্পর্কিত কাঠামো, আকার এবং সেগুলির মধ্যে থাকা স্থানগুলি এবং পরিমাণ এবং তাদের পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই বিষয়গুলি যথাক্রমে সংখ্যা তত্ত্বের প্রধান উপশাখা,বীজগণিত, জ্যামিতি, এবং বিশ্লেষণ। তবে একাডেমিক শৃঙ্খলার জন্য একটি সাধারণ সংজ্ঞা সম্পর্কে গণিতবিদদের মধ্যে কোন সাধারণ ঐকমত্য নেই।
গণিতে সংখ্যা ও অন্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশিসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। গণিতবিদগন বিশৃঙ্খল ও অসমাধানযুক্ত সমস্যাকে শৃঙ্খলভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া খুঁজে বেড়ান ও তা সমাধানে নতুন ধারণা প্রদান করে থাকেন।গাণিতিক প্রমাণের মাধ্যমে এই ধারণাগুলির সত্যতা যাচাই করা হয়। গাণিতিক সমস্যা সমাধান সম্পর্কিত গবেষণায় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বা শত শত বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। গণিতের সার্বজনীন ভাষা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা একে অপরের সাথে ধারণার আদান-প্রদান করেন। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা।
লসাগুর খেলা
১. দুইটি সংখ্যা নিয়ে সংখ্যাগুলোর মৌলিক উৎপাদকের গাছ আঁক। এবার নিচে লসাগু’র একটা বাক্সও আলাদা করে আঁক যেখানে লসাগু’র মৌলিক উৎপাদকগুলো থাকবে। পূর্বের ধারণার মাধ্যমে ১ম সংখ্যা থেকে উৎপাদক নাও এবং তার গুণিতক বের করার জন্য ২য় সংখ্যায় একই উৎপাদক থাকলে তা ১ম সংখ্যার উৎপাদকের সাথে মিলাও। এবার ২য় সংখ্যায় আরও মৌলিক উৎপাদক থাকলে ১ম সংখ্যার গুণিতক বানানোর জন্য তা নিচে লসাগু’র বাক্সে নামাও।
- এক্ষেত্রে নিচের মতো করে আগে ১ম সংখ্যার উৎপাদক নামাও। এরপর ২য় সংখ্যার গিয়ে একই উৎপাদক থাকলে তা ১ম সংখ্যার সাথে মিলাও। আরও অবশিষ্ট থাকলে ১ম সংখ্যার গুণিতক বানানোর জন্য সেটা নিচে নামাও। এখানে ১ম সংখ্যা ৪ থেকে প্রথমে ২, ২ মৌলিক উৎপাদক নিচে আসবে। এরপর ২য় সংখ্যা ৬ থেকে একই মৌলিক ‘উৎপাদক ২ মিলাও এবং ৩ নিচে নামাও।
২. এভাবে লসাগু করতে পারলে এরপর দুইটি বড় সংখ্যা নাও। ধরা যাক সংখ্যা দুইটি ৩০ ও ৪৫। প্রথমে এই সংখ্যা দুইটির মৌলিক ‘উৎপাদক এর গাছ বানাও।
এরপর আগের বর্ণিত নিয়ম অনুসারে আগে প্রথম সংখ্যা থেকে মৌলিক ‘উৎপাদক লসাগু’র বাক্স নামাও। এরপর দ্বিতীয় সংখ্যা থেকে একই মৌলিক ‘উৎপাদক মিল করো ও অবশিষ্ট মৌলিক’ উৎপাদক নামাও।
এরপর লসাগু’র মৌলিক উৎপাদক থেকে লসাগু বের করো।
- এভাবে লসাগু বের করার মাধ্যমে সাধারণ গুণিতক বের করে লসাগু নির্ণয় ও মৌলিক’ উৎপাদক থেকে লসাগু নির্ণয় করার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে। এরপর লসাগু’র মৌলিক ‘উৎপাদক ১ম সংখ্যা ও ২য় সংখ্যায় একইসাথে খেয়াল করবে। একই মৌলিক’ উৎপাদক পাওয়া গেলে তীর চিহ্ন দিয়ে সেটা বাক্সে নামাবে, একই না পাওয়া গেলে সেটা শুধু তীর চিহ্ন দিয়ে সেটা নামাবে। এভাবে লসাগু বের করলেও দেখবে যে লসাগু একই আসে।
- ১৮, ১২, ১৪ এর লসাগু নির্ণয় করার উপায় এর একটা ধারণা পেয়েছ।
উপরের পদ্ধতিকেই লসাগু নির্ণয়ের ‘ইউক্লিডীয় প্রক্রিয়া’ বলা হয়।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো।
১) এই পদ্ধতিতে অন্তত দুইটি সংখ্যার মধ্যে থাকলে তবেই সেটাকে বেছে নেওয়া বা সেটা দিয়ে ভাগ করা হচ্ছে কেন?
২) শুরুতে ২ এর পরিবর্তে ৭ বা ৩ দিয়ে ভাগ করে দেখো লসাগু একই হয় কিনা?
ইউক্লিডীয় প্রক্রিয়ায় লসাগু নির্ণয় সম্পর্কে যা জানলাম:
১২, ১৮,২০, ১০৫ এর লসাগু নির্ণয়।
প্রদত্ত উদাহরণ থেকে নিয়মটি লক্ষ করি:
- সংখ্যাগুলোর মধ্যে (,) চিহ্ন দিয়ে তাদেরকে এক সারিতে লিখে নিচে একটি রেখা (L) টানা হয়েছে।
- প্রদত্ত সংখ্যাগুলোর কমপক্ষে দুইটিকে সাধারণ মৌলিক গুণনীয়ক দ্বারা ভাগ করা হয়েছে।
- গুণনীয়কটি দ্বারা যে সংখ্যাগুলো নিঃশেষে বিভাজ্য তাদের ভাগফলও এর সঙ্গে নিচে লেখা আছে।
- যেগুলো বিভাজ্য নয় সেগুলো অপরিবর্তিত রেখে লেখা হয়েছে।
- নিচের সারির সংখ্যাগুলো নিয়ে আগের নিয়মে কাজ করা হয়েছে।
- এভাবে ভাগ করতে করতে সবার নিচের সারির সংখ্যাগুলো যখন পরস্পর সহমৌলিক হয়েছে তখন আর ভাগ করা হয়নি।
- সবার নিচের সারির সংখ্যাগুলো ও ভাজকগুলোর ধারাবাহিক গুণফলই নির্ণেয় লসাগু।
আরও দেখুনঃ