আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ আরও একটু সূচক । এটি সপ্তম শ্রেনী গণিতের সূচকের গল্প এর অন্তর্গত।
আরও একটু সূচক
তোমরা জানো, সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো এসে পৌছাতে গড়ে ৮ মিনিট ১৮ সেকেন্ড সময় লাগে। কিন্তু তোমরা কি জানো পৃথিবী থেকে সূর্যের দুরত্ব কতটুকু? সুবিধার জন্য ধরে নেয়া হয় সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব ১৫০০০০০০০ কিলোমিটার।
আবার, তোমরা কি জানো আলোর গতিবেগ কতো? গাণিতিক সুবিধার্থে ধারণা করা হয় আলোর গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩০, ০০, ০০, ০০০ মিটার।
একটু চিন্তা করো, আমরা তো সূচকের সাহায্যে অনেক বড় গুণাকারকে সহজে এবং ছোট আকারে প্রকাশ করে ফেলতে পারি। এখন একটু ভেবে দেখো তো, সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব কিংবা আলোর গতিবেগের মত বড় সংখ্যাকে ছোট আকারে প্রকাশের জন্য আমরা সূচকের কোন সাহায্য নিতে পারি কী না?
আলোর গতিবেগের জন্য প্রদত্ত ছকটি দেখো। এখানে তোমাদের জন্যে কয়েকটি ঘর পূরণ করে দেয়া আছে। তুমি সেগুলোর সাহায্যে বাকিগুলো পূরণ করো এবং সেটির সাহায্যে চিন্তা করো তো ঠিক কি হয়। তবে ছক পূরণ করার সময় অবশ্যই একটি বিষয় মাথায় রাখবে, নিচের দ্বিতীয় কলামে কিন্তু কখনও ভাগ করতে করতে ১ এর চেয়ে ছোট সূচকহীন কোন সংখ্যা আসবে না।
ছক ১
এভাবেই সূচকের সাহায্যে যে শুধু কষ্ট কমানো যায় ব্যাপারটা এমন নয়। বরং অনেক বড় সংখ্যাকে ছোট আকারে প্রকাশ করা যায়।
তাহলে চলো এবার আমরা সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্বকে ছোট আকারে প্রকাশের জন্য ছক ২ দেখি। এখানেও তোমাদের সুবিধার জন্য কয়েকটি ঘর পূরণ করে দেয়া আছে।
ছক ২
এখানে একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে যে ছকের শেষ সারিতে ১৫ এর সাথে ১০ সূচক আকারে রয়েছে। এখন পূর্বের ছকটির কথা চিন্তা করে দেখো তো, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত ভাগ করে ১০ এর চেয়ে ছোট, কিন্তু ১ এর চেয়ে বড় কোন সংখ্যা না পেয়েছি, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রক্রিয়াটি চালিয়ে গিয়েছি। এক্ষেত্রেও চাইলে আমরা সেটি করতে পারি। সেটি নিচের বাক্সে সম্পন্ন করো।
তাহলে কি দেখতে পেলে? সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্বকে ছোট আকারে প্রকাশ করলে কি পাওয়া যায়?
আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত প্রায় সবক্ষেত্রেই ১০ এর সূচকের ব্যাপারটি দেখেছি। এখন আমরা সেগুলো নিয়ে একটু চিন্তা করব। আমরা সরাসরি সংখ্যা দিয়ে একটি উদাহরণ দেখার চেষ্টা করি। ১ হাজার। এর গাণিতিক রূপ হল ১০০০।
এবার দেখো, আমরা ১০০০ = ১ × ১০^৩ পেয়েছি। একটু ভাবো তো কোন সংখ্যার সাথে ১ গুণাকারে থাকলে সেটির কি কোন পরিবর্তন হয়? হয় না তো। সেক্ষেত্রে আমরা লিখতে পারব ১০০০ = ১ × ১০^৩ |
দেখো, সূচকবিহীন সংখ্যা ১ হলে আমরা সেটিকে উহ্য রাখতে পারি।
তাহলে দেখেছো, বাস্তবের বিভিন্ন বড় সংখ্যাকে এভাবে ছোট আকারে প্রকাশ করা যায়। প্রকাশের উপায় নিয়ে, উপরের দুটি উদাহরণ থেকে তোমার অনুধাবন নিচের প্রশ্নের উত্তরের সাহায্যে প্রকাশ করো।
* ভাগের কাজটি কখন শেষ করব?
* ভাগ করে সূচক বিহীন যে সংখ্যাটি পাবো, তা কি ১ এর চেয়ে ছোট হতে পারবে? কিংবা ১ এর সমান হতে পারবে?
* ভাগ করে সূচক বিহীন যে সংখ্যাটি পাবো, তা কি ১০ এর সমান কিংবা বড় হতে পারবে?
একক কাজ
১) তোমরা নিশ্চয় কোভিড-১৯ মহামারী সম্পর্কে অবগত আছো। মারাত্মক ছোঁয়াচে এই মহামারীর কারণে পুরো পৃথিবী একটা বড় সময় স্থবির হয়ে ছিল। আমরা সেই মহামারী নিয়ে একটি একটি গণনা করার চেষ্টা করব। ধরো, একটি বাড়িতে ৩ জন লোক আছে। তারা প্রত্যেকেই কোভিড আক্রান্ত হয়েছে। এখন হিসাব করে দেখা গেল, তাঁরা ৩ জন প্রত্যেকেই ১ দিনে আলাদা-আলাদাভাবে ন্যুনতম ৩ জনকে আক্রান্ত করতে সক্ষম। আবার তাঁদের দ্বারা আক্রান্ত প্রত্যেকে আবার এক দিনে আলাদা-আলাদাভাবে ন্যুনতম ৩ জন করে ব্যাক্তিকে আক্রান্ত করতে সক্ষম।
সূচকের ধারণার সাপেক্ষে বলো তো কোনরকম স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে, পরবর্তী ৫ দিনে সর্বনিম্ন কতজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যাক্তি থাকতে পারবে? ছক অনুযায়ী পূরণ করার চেষ্টা করো। সাহায্যের জন্য চাইলে গাছ-চিত্রটি দেখতে পারো।
এই ধারায় ১১ তম ও ১৪ তম দিন শেষে সর্বনিম্ন কতজন আক্রান্ত রোগী থাকা সম্ভব?
২) খালি ঘরগুলো সঠিকভাবে পূরণ করো
৩) ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ, ১ কোটি এবং ১০ কোটি সংখ্যাগুলোকে গাণিতিক ভাষায় ছোট আকারে প্রকাশ করো। দেখো তো মূল সংখ্যায় ১ এর ডানে মোট কতটি শূণ্য রয়েছে। এবার সংখ্যাটিকে ছোট আকারে প্রকাশের পর, যে সূচকীয় সংখ্যাটি পাও, তার সাথে পূর্বের প্রাপ্ত শূণ্যের সংখ্যার মাঝে কোন সম্পর্ক পাওয়া যায় কী?

আরও দেখুনঃ