আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ ত্রিভুজের কোণের সম্পর্ক । এটি সপ্তম শ্রেনী গণিতের আকৃতি দিয়ে যায় চেনার অন্তর্গত।
ত্রিভুজের কোণের সম্পর্ক
এবারে আমরা ত্রিভুজের কোণগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখবো তাদের মাঝে কোন বিশেষ সম্পর্ক পাওয়া যায় কি না। নিচের ছবিটির মত করে একটি ত্রিভুজ খাতায় আঁকো যেন বাহুগুলো একটু করে অতিরিক্ত থাকে।
১ চিহ্নিত কোণটি ত্রিভুজের ভেতরের দিকে রয়েছে। আমরা একে বলবো ত্রিভুজের অন্তঃস্থ কোণ। একইভাবে ২ এবং ৩ চিহ্নিত কোণগুলোকেও আমরা বলবো ত্রিভুজের অন্তঃস্থ কোণ। ১ চিহ্নিত কোণের সাথে সন্নিহিত ৪ এবং ৭ চিহ্নিত দুইটি কোণ রয়েছে যারা পরস্পর বিপ্রতীপ। এই কোণগুলোও আসলে ত্রিভুজের বাহু দিয়েই তৈরি হয়েছে, কিন্তু তারা ত্রিভুজক্ষেত্রের বাইরে রয়েছে।
আমরা এই কোণগুলোর প্রত্যেককে বলবো ত্রিভুজের বহিঃস্থ কোণ। একইভাবে ৫, ৮ এবং ৬, ৯ কোণগুলো হচ্ছে ত্রিভুজের বহিঃস্থ কোণ। যদি ১ এর সাথের বহিঃস্থ কোণ হিসাব করতে বলে, আমরা ৪ অথবা ৭ যেকোনো একটা পরিমাপ করলেই পারি, কারণ তারা পরস্পর বিপ্রতীপ এবং বিপ্রতীপ কোণেরা পরস্পর সমান হয় ।
পূর্বের শ্রেণিতে তোমরা নিশ্চয়ই সম্পূরক কোণ (supplementary angle) সম্পর্কে জেনে এসেছো। দুইটি কোণের পরিমাপ করে আমরা যদি তাদের যোগফল দুই সমকোণের সমান পাই তাহলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির সম্পূরক কোণ বলা হয়। আবার লক্ষ করে দেখো, ত্রিভুজের যে অন্তঃস্থ এবং বহিঃস্থ কোণগুলো সন্নিহিত (adjacent) তারা একে অপরের সম্পূরক কোণ। যে কোন বহিঃস্থ কোণের সন্নিহিত বাদে বাকি দুইটি কোণকে বলবো আমরা বিপরীত অন্তঃস্থ কোণ এবারে চলো আমরা ত্রিভুজের কোণগুলার মাঝে কোন সম্পর্ক পাওয়া যায় কী না খুঁজে দেখি।
একক কাজ:
কাগজ দিয়ে প্রত্যেকেই একটি করে ত্রিভুজকে তিন টুকরো করে নাও এবং সাজিয়ে নাও চিত্রের মত। তারপর খেয়াল করো যে তিনটি কোণ মিলে একটি সরল কোণ (straight angle) তৈরি হয়েছে।
একক কাজ :
আলাদা রং এর কাগজ দিয়ে একইরকম তিনটি ত্রিভুজ কেটে চিত্রের মত সাজিয়ে নাও। রঙ্গিন কাগজ না হলে সাদা কাগজ দিয়েও কাজটি করা যাবে। আগের চিত্রের মত এখানেও সরল কোণ তৈরি হচ্ছে কি?
একক কাজ:
একটি ত্রিভুজ ABC নিয়ে AC বাহুকে ভাঁজ করে লম্ব তৈরি করো। লম্বটি যেই বিন্দুতে AC কে ছেদ করে সেটির নাম দিলাম D.
তারপর শীর্ষবিন্দুটিকে বিপরীত বাহুর উপরে মিলিয়ে নাও চিত্রের মত করে। AE ও BE রেখাংশ দুইটি পরিমাপ করে দেখো। তাদের মাঝে কোন মিল / পার্থক্য পাচ্ছ কী? আবার AC এবং EF রেখা দুইটিকে পর্যবেক্ষণ করে দেখো তাদের মাঝে কোন সম্পর্ক পাও কী না?
পরিশেষে নিচের চিত্রটির মত শীর্ষবিন্দু A ও C কে D এর সাথে মিলিয়ে নিই।
দলগত কাজ:
দলের পাঁচজন খাতায় একটি করে ত্রিভুজ আঁকো। এবারে নিচের ছকটি পূরণ করো। পাঁচটি ত্রিভুজের ছকে উল্লিখিত কোণগুলো পরিমাপ করে।
তোমরা ত্রিভুজের তিন কোণের যোগফলে কি বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য দেখতে পাচ্ছ? আবার বহিঃস্থ কোণ এবং তাদের বিপরীত অন্তঃস্থ কোণগুলোর পরিমাপের যোগফলের মাঝে সম্পর্ক লক্ষ করে দেখো। আমরা এখান থেকে নিচের দুইটি সিদ্ধান্ত পেতে পারি।
ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি দুই সমকোণ বা ১৮০°।
যেকোনো বহিঃস্থ কোণের পরিমাপ তার বিপরীত অন্তঃস্থ কোণ দুইটির পরিমাপের যোগফলের সমান।
উদাহরণঃ
একটি ত্রিভুজের সবকয়টি বাহু সমান হলে তাকে আমরা সমবাহু ত্রিভুজ (equilateral triangle) বলি। সমবাহু ত্রিভুজের তিনটি কোণই সমান। তাদের প্রত্যেকের পরিমাপ কত হবে?
সমাধানঃ
একটি ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০°। যেহেতু তারা সবাই সমান, তাদের প্রত্যেকের মান হবে ১৮০°/৩ = ৬০°
আরও দেখুনঃ