পূর্ণসংখ্যার জগৎ । মাধ্যমিক ৬ষ্ট শ্রেণি গণিত, ২০২৩

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় পূর্ণসংখ্যার জগৎ – যা পূর্ণসংখ্যার জগৎ এর অন্তর্ভুক্ত। গণিত হল জ্ঞানের একটি ক্ষেত্র যাতে সংখ্যা, সূত্র এবং সম্পর্কিত কাঠামো, আকার এবং সেগুলির মধ্যে থাকা স্থানগুলি এবং পরিমাণ এবং তাদের পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই বিষয়গুলি যথাক্রমে সংখ্যা তত্ত্বের প্রধান উপশাখা,বীজগণিত, জ্যামিতি, এবং বিশ্লেষণ। তবে একাডেমিক শৃঙ্খলার জন্য একটি সাধারণ সংজ্ঞা সম্পর্কে গণিতবিদদের মধ্যে কোন সাধারণ ঐকমত্য নেই।

গণিতে সংখ্যা ও অন্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশিসমূহের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। গণিতবিদগন বিশৃঙ্খল ও অসমাধানযুক্ত সমস্যাকে শৃঙ্খলভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া খুঁজে বেড়ান ও তা সমাধানে নতুন ধারণা প্রদান করে থাকেন।গাণিতিক প্রমাণের মাধ্যমে এই ধারণাগুলির সত্যতা যাচাই করা হয়। গাণিতিক সমস্যা সমাধান সম্পর্কিত গবেষণায় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বা শত শত বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। গণিতের সার্বজনীন ভাষা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা একে অপরের সাথে ধারণার আদান-প্রদান করেন। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা।

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

অনিতা একটি কলম কিনতে বাজারে গেল। তার সাথে আছে মাত্র 10 টাকা। কিন্তু কলমটির দাম 15 টাকা। দোকানদার অনিতার কাছ থেকে বাকির পরিমাণ হিসেবে 5 টাকা লেখেন। মনে রাখার জন্য তার হিসাবের খাতায় অনিতার নামের পাশে 5 টাকা লিখলেন। দোকানে একই সময়ে রাতুলও এসেছিল ঐ কলমটি কিনতে। সে কলমটি কেনার জন্য দোকানদারকে 20 টাকার একটি নোট দিলো। খুচরা 5 টাকা না থাকায় রাতুলকে দোকানদার 5 টাকা পরে নিতে বললেন। এবং মনে রাখার জন্য হিসাবের খাতায় রাতুলের নামের পাশেও 5 টাকা লিখলেন।

কিন্তু এবারে একটা সমস্যা দেখা দিল। দোকানদারের কীভাবে মনে থাকবে যে অনিতার কাছে তিনি 5 টাকা পাবেন আর রাতুলকে তার 5 টাকা দিতে হবে। তোমরা কি বলতে পারবে কীভাবে দোকানদার এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন?

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

অনিতা ও রাতুল এরপর স্কুলে গিয়ে ‘এক গুটি দুই খেলোয়াড়’ নামের একটা খেলায় অংশ নিয়ে ঠিক একই রকম একটা সমস্যায় পড়ে। চলো দেখি তারা সেই সমস্যার সমাধান কীভাবে খুঁজে পেল?

এক গুটি দুই খেলোয়াড়

অনিতা ও রাতুল খেলার জন্য শুরুতে একটি A4 কাগজকে নিচের ছবির মতো করে ভাঁজ করে তারপর কেটে চারটি কাগজের স্ট্রিপ তৈরি করে নিচের মতো করে সংখ্যাগুলো লিখে নিল।

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

 

  • এরপর দুইটি কাগজের স্ট্রিপ নিয়ে পাশাপাশি নিচের মতো করে সাজিয়ে নিল।
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
  • খেলার জন্য একটি ছক্কা এবং একটি গুটি প্রয়োজন হবে।

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎশুরুতে তারা ৪ লেখা ঘরের উপর একটি গুটি রাখল।

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15

এরপর খেলার নিয়ম অনেকটা লুডু খেলার মতোই। তবে দুইটা পার্থক্য আছে:

১) এখানে গুটি একটাই।

২) প্রথমে যে ছক্কাটি নিক্ষেপ করবে তার জন্য গুটি যাবে ডান দিকে। আর দ্বিতীয় যে ছক্কা নিক্ষেপ করবে তার জন্য গুটি যাবে বাম দিকে। দুজনের ক্ষেত্রেই নিক্ষেপ করা ছক্কায় যে সংখ্যাটি উঠবে তার গুটি তত ঘর ডান দিকে অথবা বাম দিকে সরবে।
এরপর আবার প্রথমজন ছক্কা নিক্ষেপ করবে এবং খেলা চলতে থাকবে।

প্রথমজন যদি 15 তে পৌঁছাতে পারে তবে সে বিজয়ী হবে। আর দ্বিতীয়জন যদি তে পৌঁছাতে পারে তাহলে সে বিজয়ী হবে। তো অনিতা প্রথমে ছক্কা নিক্ষেপ করল এবং তারপর রাতুল, তারপরে আবার অনিতা-এভাবেই খেলা চলতে থাকল। খেলার একপর্যায়ে গুটির অবস্থান ছিল 4 লেখা ঘরে। এই অবস্থায় রাতুলের নিক্ষেপ করা ছক্কায় 5 উঠল। এবার রাতুল গুটিটা নিয়ে কোথায় যাবে বলো তো? 0 চিহ্নের বামে তো আর কোনো ঘর নেই।

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

কিন্তু খেলাটা চলবে কীভাবে? এর বামে তো কোনো সংখ্যাই নাই। তখন অনিতা ও রাতুল একটা বুদ্ধি বের করল। বাকি দুইটি কাগজের স্ট্রিপ নিয়ে সেগুলোকে ০ এর বামে স্থাপন করল। এবার রাতুলের ছক্কায় 5 ওঠার পর সে ) এর বামে আরও এক ঘর গিয়ে গুটি রাখতে পারল।

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ০ এর ডানে এবং বামে একই সংখ্যা দুইবার করে আছে। তাই আলাদা করার জন্য তারা 0 বামের সংখ্যাগুলোকে সবুজ রং করল।

 

google news
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

এরপর তারা আবার নতুন করে খেলা শুরু করল আর খেলার নিয়ম একটু বদলে দিল।

খেলা শুরুতে এবার গুটি থাকবে ০ এর ঘরে। বিজয়ী হওয়ার নিয়ম প্রথমজনের জন্য একই থাকবে অর্থাৎ ৪ তে পৌঁছাতে পারলেই সে বিজয়ী হবে।

তবে দ্বিতীয়জনের জন্য নতুন নিয়ম হবে। দ্বিতীয়জন যদি এর বাম দিকের ৪ অর্থাৎ সবুজ রঙের ৪ তে পৌঁছাতে পারে তবে সে বিজয়ী হবে।

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎএরপর একদিন খেলার সময় তারা সবুজ রং খুঁজে না পেয়ে আরও সহজ কোনো উপায়ে ০ এর বাম দিকের সংখ্যাগুলোকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় কিনা ভাবা শুরু করল। অবশেষে তারা একমত হলো যে, সংখ্যাগুলোর আগে বিয়োগ চিহ্ন বা ঋণাত্মক চিহ্ন” বসিয়ে দেওয়া হবে।

এই সংখ্যাগুলো 0 এর বাম দিকে তাই শূন্যের চেয়ে ছোট হবে। আর সংখ্যাগুলোকে আমরা ঋণাত্মক সংখ্যা (Negative Numbers) বলি।

 

পূর্ণসংখ্যার জগৎ

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment